আশপাশের সাত জেলায় কঠোর বিধিনিষেধের (লকডাউন) ঘোষণা দিলেও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা যায়নি রাজধানী ঢাকাকে। নগরীর প্রবেশ পথগুলো থেকে যানবাহন ফিরিয়ে দেওয়া হলেও মানুষের প্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না। কোনো না কোনো উপায়ে রাজধানীতে প্রবেশ করছেন, আবার বিকল্প উপায়ে রাজধানীও ছাড়ছেন মানুষ।
দেশের ভিন্ন এলাকা থেকে এসে প্রবেশ পথে নেমে চেকপোস্ট পার হয়ে নগরীতে প্রবেশ করছেন তারা। কার্যত, শুধু ঢাকা থেকে দূরপাল্লার গণপরিবহনই বন্ধ, বাকি সব চলছে। সেই সঙ্গে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। বেড়েছে ভোগান্তিও। রাজধানীর প্রবেশমুখেই শুধু গণপরিবহন চলাচলে কঠোরতা লক্ষ্য করা গেছে।
দেখা গেছে, গাজীপুরসহ উত্তরভঙ্গ থেকে মানুষ টঙ্গীবাজার পর্যন্ত গণপরিবহনে এসে সেখান থেকে কিছুদূর হেঁটে আবার আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর পরিবহনে ঢাকায় প্রবেশ করছেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এসে সেখান থেকে রাজধানীর যে কোনো পরিবহনে ঢাকায় আসছেন সাধারণ মানুষ। একইভাবে সাভার থেকেও বিকল্পভাবে ঢাকায় আসছেন হাজার হাজার মানুষ। কোনোভাবেই রাজধানীতে প্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না মানুষের।
সকালে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দূরপাল্লার কোনো বাস প্রবেশ না করলেও মানুষ ঠিকই প্রবেশ করছেন। সেখান থেকে যাত্রী নিয়ে রাজধানীতে আসা-যাওয়া করছে বাসগুলো। প্রতিটি বাসই অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। একই চিত্র গাজীপুর থেকে ঢাকামুখী সড়কেরও। সেখানে গাড়ির সংখ্যা কম দেখা গেলেও মানুষ আসছিলেন ঢাকার দিকে। অপরদিকে সাভার আমিনবাজার সড়কের চিত্রও ছিল একই।
গাজীপুর : গাজীপুর মেট্রোপলিটন এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গাজীপুরে প্রবেশের ২৭টি পয়েন্ট চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। দূরপাল্লার যানবাহন না চললেও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, টেম্পো, পিকআপ এবং কাভার্ডভ্যানে করে মানুষ বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত যানবাহন এবং মোটরসাইকেলে করেও যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। অনেকে দলবেঁধে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন নির্ধারিত গন্তব্যের উদ্দেশে। পুলিশের চেকপোস্টের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিচালিত হচ্ছে মোবাইল কোর্ট।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যান চলাচলে ধীরগতি।
মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জে সরকার বিধিনিষেধ মানতে সাধারণ মানুষের মাঝে তেমন কোনো আগ্রহের দেখা মেলেনি। পুলিশ দেখলে মুখে মাস্ক পরেন, সরে গেলেই তা আবার খুলে ফেলেন সাধারণ মানুষ। যে যার মতো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছেন সড়কগুলোতে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপও রয়েছে। খোলা রয়েছে শপিং মল, দোকানপাট ও বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে জেলার মাওয়ার শিমুলিয়া ঘাটে ফেরি ছাড়া সব প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ১৭টি ফেরির মধ্যে ১টি ফেরি অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২টি ফেরি মেরামতের কাজ চলছে আর ১৪টি ফেরি যান পারাপারের জন্য এ ঘাটে রয়েছে। শুধু পণ্যবাহী যানবাহন, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স আর জরুরি সেবার যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
রাজশাহী : রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় চলমান ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ এর সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে। গতকাল বেলা ৩টায় জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। এখন যেসব বিধিনিষেধ আছে, সেগুলোও আগামী এক সপ্তাহ বহাল থাকবে। তবে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে যে, সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এই আদেশের আওতা বহির্ভূত থাকবেন। রাজশাহীর জনপ্রতিনিধি এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করে লকডাউন বাড়ানো হলো বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
খুলনা : সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গতকাল খুলনা নগর ও জেলায় দ্বিতীয় দিনের মতো লকডাউনে পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। নগরীর ডাকবাংলা, বয়রা, শিববাড়ী, কেডিএ এভিনিউ, রূপসা স্ট্যান্ড মোড়, মজিদ সরণিসহ বিভিন্ন সড়কে বাঁশ দিয়ে আটকে চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। শহরের মধ্যে ইজিবাইক রিকশা-ভ্যান, দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল।
পিকচার প্যালেস, ডাকবাংলা, নিউমার্কেট, শিববাড়ী, সোনাডাঙ্গা, ময়লাপোতা ও শেখপাড়া এলাকায় সব প্রকার দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তবে সড়কে ব্যক্তিগত কিছু যানবাহন চলাচল করছে। পাড়ামহল্লায় চায়ের দোকান, হোটেল খোলা রয়েছে। সেখানে মাস্ক ব্যবহার বা শারীরিক দূরত্ব মানছে না কেউ।
মানিকগঞ্জ : সাত দিনের লকডাউনে দ্বিতীয় দিনেও ঢাকা আরিচা মহাসড়কে কোনো যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল করেনি। তবে পণ্যবাহী ট্রাকসহ প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিকশাসহ ছোট যানবাহন চলাচল করছে। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে শহরের বড় বড় মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলো বন্ধ ছিল। তবে ছোট ছোট দোকানপাট খুলতে দেখা যায়।
শহরের গুরুরূপূর্ণ জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লকডাউন বাস্তবায়ন করতে দেখা যায়। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে প্রয়োজনীয় ফেরি দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক অ্যাম্বুলেন্স জরুরি কাজে ব্যবহৃত যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তবে এই নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ : মহামারী করোনাভাইরাসের ডেল্টা সংক্রমণ রোধে সদ্য ঘোষিত লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ ও নারায়ণগঞ্জ থেকে বহির্গমন ঠেকাতে সহস্রাধিক গণপরিবহনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন যানসহ লকডাউন অমান্যকারীদের করা হয়েছে জরিমানা। মঙ্গলবার থেকে গতকাল বিকাল পর্যন্ত জেলায় বর্তমানে জেলা প্রশাসনের ২০টি মোবাইল কোর্ট ও পুলিশ প্রশাসনের প্রায় ৩০টি টিম গুরুত্বপূর্ণ সড়কে কাজ করছে। এর মধ্যে আইন ভঙ্গ করায় ২০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ২৭টি মামলা ও প্রায় ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে শহরজুড়ে মানুষের আনাগোনা ও রিকশা চলছে দেদার।
সরেজমিন দেখা যায়, সাইনবোর্ড, সানারপাড় সিদ্ধিরগঞ্জ, ভুলতা, মেঘনা ঘাট, কাচপুর আড়াইহাজার মদনগঞ্জসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ঢাকা থেকে ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও গণপরিবহনে আসা যাত্রীদের লকডাউনে বের হওয়ার কারণ নির্ণয় করা হচ্ছে। কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ না দেখানোয় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সহস্রাধিক নারায়ণগঞ্জমুখী ও ঢাকামুখী যানবাহন ফিরিয়ে দিয়েছেন লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ প্রশাসন।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ শহরের ফতুল্লার পঞ্চবটি, পাগলা পোস্তগোলা, মুন্সীগঞ্জের মোক্তারপুর ও আদমজী সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে পুলিশের ব্যারিকেড পোস্ট।
গোপালগঞ্জ : জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সকাল থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে শহরে চলাচলকারী ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা ফিরিয়ে দেয়। কোনো ইজিবাইক বা রিকশায় একাধিক যাত্রী নিয়ে চলাচল করলে তাদেরও সতর্ক করা হয়। তারপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে শহরের কিছু সংখ্যক ইজিবাইক ও রিকশা চলাচল করেছে। এ ছাড়া লকডাউন কার্যকর করতে জেলা প্রশাসন একাধিক মোবাইল কোর্ট চালু রেখেছে। তারা নির্দেশনার বাইরে কোনো কাজ কেউ করলে তাদের তৎক্ষণাৎ বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা করছেন।
যশোর : করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু ক্রমাগত বাড়তে থাকায় যশোরে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল মধ্যরাত থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে এই লকডাউন। গতকাল দুপুরে যশোর সার্কিট হাউসে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তিন দফায় এক সপ্তাহ করে জেলায় ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ আরোপ করা হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের তৎপরতা থাকলেও অনেকেই স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ মানছিলেন না। ফলে জেলায় প্রতিদিনই করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। এ রকম পরিস্থিতিতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি জরুরি সভায় মিলিত হয়ে জেলায় লকডাউন কার্যকরের এই সিদ্ধান্ত নেয়।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চলছে ঢিলেঢালা লকডাউন। দোকানপাট বন্ধের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই আন্তজেলা সড়কে চলছে যানবাহন। তবে লকডাউন শতভাগ বাস্তবায়নে ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
গতকাল ফটিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খবর নিয়ে জানা যায়, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন ইউনিয়নে নেই কোনো সচেতনতা। খোলা রয়েছে দোকানপাট, চলছে ক্রয়-বিক্রয়। সড়কে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল। ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ যাতায়াত করছেন। ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সায়েদুল আরেফিন বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং চলছে। সর্বত্র নির্দেশনা মানা হচ্ছে কি না তদারকি করতে মাঠে আছে উপজেলা প্রশাসন।
সিলেট : করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাত জেলায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। ফলে বাইরের জেলাগুলো থেকে যানবাহন ঢুকতে পারছে না ঢাকায়। বাস ও ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা পড়েছেন মারাত্মক দুর্ভোগে। স্থলপথে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় চাপ বাড়ছে এয়ারলাইন্সগুলোতে। গত সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ঢাকার সঙ্গে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে ঢাকাগামী যাত্রীরা পড়েন বিড়ম্বনায়।
অনেকে টার্মিনালে গিয়ে বাস না পেয়ে ছুটেন রেলওয়ে স্টেশনে। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় সেখান থেকেও ফিরতে হয় ব্যর্থ মনে। ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে কঠোর বিধিনিষেধের কারণে প্রাইভেট গাড়ি নিয়েও যাত্রীরা যেতে পারছেন না ঢাকায়। এদিকে, বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় চাপ বাড়ছে আকাশপথে। যাদের জরুরি কাজ রয়েছে তারা এয়ারলাইন্সের টিকিট কেটে ঢাকা যাচ্ছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সিলেট অফিসের ব্যবস্থাপক ফারুক আলম জানান, বাস ও ট্রেন বন্ধ থাকায় বিমানের যাত্রী বাড়ছে। স্থলপথে যোগাযোগ বন্ধ থাকলে আর দু-এক দিন পর টিকিট সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ : ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় লকডাউনের কারণে সিরাজগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী ও নওগাঁ রুটে যাত্রী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অন্যদিকে, এসব রুটে চলাচলরত শতাধিক বাসের প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। বারবার লকডাউনের কারণে বাস বন্ধ থাকায় মালিকরাও চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এমনকি বাসের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। সিরাজগঞ্জ বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ জানান, ঢাকার আশপাশের জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় না।
এ কারণে গত দুই দিন ধরে সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকামুখী বাস ছেড়ে যাওয়ার পর টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা এলাকা থেকে বাসগুলো ফেরত পাঠানো হচ্ছে। গতকাল সকালেও কয়েকটি বাস সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু পুলিশ বাসগুলো টাঙ্গাইল থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। এ কারণে বিকাল থেকে ঢাকার সব কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও করোনা প্রভাব বাড়ার কারণে রাজশাহী ও নওগাঁ রুটেও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাস চলাচল বন্ধের কারণে একদিকে যেমন যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অন্যদিকে, শ্রমিক ও বাস মালিকরাও ক্ষতির মধ্যে পড়ছে। সামনে ঈদ শ্রমিকরা কীভাবে ঈদ উদযাপন করবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।